রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
দেশের বৃহত্তম যৌনপল্লী রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লী। বেসরকারি হিসেবে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি যৌনকর্মী বাস করে এই যৌনপল্লীতে। শারমিন আক্তার নামের একজন যৌনকর্মী তারই ভালবাসার মানুষের (বাবুর) হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সম্প্রতি।
যৌনকর্মীরা বাবুদের খুব ভালোবাসে। বাবুদের পল্লীর বাইরে আরেকটি সংসার সন্তান থাকলেও অধিকাংশ যৌনকর্মীরা এই বাবুর উপর নির্ভরশীল। তারা মনে করে বাবুরা তাদের বাঁচার অবলম্বন। ধারণাটি মিথ্যা হয় তখন, যখন বাবুরা তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। তারপর নির্যাতন শুরু করে। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর যৌনকর্মী শারমিনের জীবনে।
উপজেলার নুরু চেয়ারম্যানের গ্রামের কাদের শেখের ছেলে জহিরুল ইসলাম (২৬) যৌনপল্লীর ভিতরে শারমিনের বাবু। গত ১৪ নভেম্বর শারমিন টাকা চাইতে গেলে তাঁকে মেরে ক্ষত-বিক্ষত করে এই জহিরুল।
ঘটনার দিন জহিরুলের বিয়ারের দোকানের সামনে বসে বিয়ার খাচ্ছিল শারমিন। এসময় শারমিন জহিরুলের কাছে পাওনা টাকা চাইলেই সে তখন মারধর করে। এসময় জহিরুলের সাথে থাকা জলিল মেম্বারও তার পেটে লাথি মারে বলে অভিযোগ করেন শারমিন। এছাড়া আরও কয়েকজন নারীনেত্রী এই মারামারিতে অংশ নেয়। নাসরিন বলেন কয়েকদিন আগে ওর বৌয়ের সন্তান হওয়ার সময় অপারেশন করার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছে। তাছাড়া আমি তাকে অনেক টাকাই দিয়েছি। কিন্তু এই টাকা চাইতে গেলেই মারধর করে।
এ ব্যাপারে জহিরুলের সাথে কথা বললে তিনি জানান তার সাথে সেদিন কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায়ে সে পরে গিয়ে চোখের কোনটায় আঘাত পায়। তবে সেখানে কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি। টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে একেক জনের কাছে একেক কথা বলে। কারো কাছে বলে দেড় লাখ আবার কারও কাছে বলে একলক্ষ টাকা। আসলে তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জলিল সরদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান মারামারির সময় আমি ছিলাম না। তার পেটে লাথি মারার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি মেরেছি এটার কোন প্রমাণ আছে তার কাছে?
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা গোয়ালন্দ ঘাট থানার এস আই দেলোয়ার হোসেন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান এটি তদানীন্তন রয়েছে। এবং মেয়েটির মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে ও জানান তিনি।