ডেস্ক রিপোর্ট:
অর্থনৈতিকসহ নানা সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তানের সামনে আরও খারাপ দিন অপেক্ষা করছে বলে মনে করছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল।
করাচিতে পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
মন্ত্রী বলেন, সরকার আগামী তিন মাসের জন্য পণ্য আমদানি বন্ধ রাখবে। এভাবে কোনো দেশ চলতে পারে না। পরিস্থিতি না বদল হলে পাকিস্তানে আরও খারাপ দিন আসতে চলেছে।
এই সংকটের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফকে দায়ী করেন মিফতা। বলেন, কোনো দেশ এত বেশি আর্থিক ঘাটতি নিয়ে উন্নতি করতে পারে না। শুধু রাজকোষ ঘাটতি নয়, ঋণের পরিমাণও ৮০ শতাংশ বেড়েছে।
পাক অর্থমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) আমলে দেশের বাজেট ঘাটতি ছিল ১৬০০ বিলিয়ন ডলার। গত চার বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৩৫০০ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থতিতে কোনো দেশই উঠে দাঁড়াতে পারে না। দেশের ঋণ যখন বাজেটের ৮০ শতাংশ হয় তখন কিছুই করার থাকে না।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সঠিক পথে আছি, কিন্তু স্পষ্টতই খারাপ দিন দেখতে পাচ্ছি। আমরা যদি তিন মাসের জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করি তবে বিভিন্ন উপায়ে আমাদের রপ্তানি বাড়াতে পারব।
অবশ্য পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বললেও বাস্তবে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। ডলারের বিপরীতে কমছে পাকিস্তানি রুপির দাম। তার ওপর আইএমএফের আর্থিক সাহায্য় পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
অর্থনৈতিকসহ নানা সংকটে পড়েছে এশিয়ার এই দেশ। রিজার্ভ কমে এসেছে। খাবার, জ্বালানি, বিদ্যুৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। বিলাসদ্রব্যের আমদানিতে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়েছেন। এ ছাড়া আটার দাম কমানোর পরামর্শ দিয়ে জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে নিজের জামা-কাপড় বিক্রি করে কম দামে আটা খাওয়াবেন।
বিভিন্ন নাটকীয়তার পর গত ৯ এপ্রিল মধ্যরাতের অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানে ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্বের অবসান ঘটে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরান দেশটির ২২তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
পরে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে আবার ভোটাভুটিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) নেতা শাহবাজ শরিফ। ক্ষমতায় এসেই নানা বিষয়ে ইমরান খানের ওপর দায় চাপিয়েছেন তিনি।
দুর্নীতির দায়ে নওয়াজ শরিফ অভিশংসিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে চার দলের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ইমরান। তার সরকারের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত।