জবি প্রতিনিধি:
পদ্মা সেতুসংশ্লিষ্ট প্রকল্প ঢাকা-যশোর রেলপথের কাজ এগিয়ে চলেছে। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে রেলওয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত হবে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চল। ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথটি কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসকে ছুঁয়ে গেছে।
প্রতিশ্রুত রয়েছে, এখানে জবি ক্যাম্পাস একটি স্টেশন পাবে। কিন্তু আদৌ তা হবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আচরণ অনেকটাই গা-ছাড়া।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হয়েছে ২৫ জুন উদ্বোধন শেষে পরদিন থেকে। এর মাধ্যমে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
এবার এই সেতু হয়ে রেল যোগাযোগ চালুর অপেক্ষা। সে লক্ষ্যে জোরেশোরে চলছে পদ্মা সেতুর রেলওয়ে সংযোগের কাজ।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ২০১৯ সালে জবির নতুন ক্যাম্পাসের ভূমি অধিগ্রহণের চেক হস্তান্তরের সময় ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক একটি নিজস্ব রেলস্টেশন স্থাপনের কথা মৌখিকভাবে বলে যান।
পদ্মা সেতুসংশ্লিষ্ট ঢাকা-যশোর রেলরুটের বিভিন্ন পয়েন্টে নতুন স্টেশনের কাজ শুরু হলেও জবি ক্যাম্পাসের স্টেশন নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে উদাসীন। তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করেনি। ইতোমধ্যে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ তিন দফা বাড়লেও এখন পর্যন্ত সীমানা প্রাচীরের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের নিজস্ব রেলস্টেশন স্থাপন বিষয়ে আমার কাছে কোনো আপডেট তথ্য নেই। খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে জানাতে পারব।’
‘নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেন বলেন, ‘একটা স্টেশন হওয়ার কথা আমিও শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে অবশ্যই স্টেশন হবে। তবে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
‘ঢাকা-যশোর রেলপথে মোট স্টেশন থাকবে ২০টি। এর মধ্যে ১৪টি নতুন ও বাকিগুলো পুনর্বিন্যাস করা হবে। প্রথম সেকশন ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে গেণ্ডারিয়া পর্যন্ত হবে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন। দ্বিতীয় সেকশন হবে গেণ্ডারিয়া থেকে মাওয়া ৩৬ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন। এটি ব্রড গেজ। এই সেকশনে থাকবে ৪টি স্টেশন। তবে এই অংশে কোথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন হবে তা নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কিছু বলেনি।’
প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, ‘রেললাইনের কেরানীগঞ্জ অংশের সঙ্গে ক্যাম্পাসের যে সীমানা রয়েছে তার উত্তর পাশে রেললাইন বরাবর ৮০০ মিটার সমান জায়গা রয়েছে। ক্যাম্পাসের স্টেশনটি সেখানে হতে পারে। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর।’
জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বিষয়টিকে এ্রখনই গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘এটা কোনো বিষয় নয়। আমরা যখন ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করব তখন দেখা যাবে।’
ঢাকা-যশোর রেল প্রকল্পটির কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৪ সাল। এর মধ্যে মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার রেলপথে ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ট্রেন চলাচলের কথা রয়েছে।