নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:
মাথাপিছু আয় বেশি দেখাতে এবারের জনশুমারিতে জনসংখ্যা কম দেখানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই জনশুমারি সঠিক হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।
বিশ্বব্যাপী এই শুমারিকে আদমশুমারি বলা হলেও সরকার এটাকে জনসুমারী বলছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার সব ক্ষেত্রে প্রতারণা করছে। সরকার প্রতারণার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ফেক গভর্নমেন্ট।’
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দীঘলিয়া গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের অন্তর্কোন্দল, দ্বিধাবিভক্তির কারণেই হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে।’
এ ঘটনায় অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরেই হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সবচেয়ে বেশি হামলা হয়। তাদের সম্পদ দখল হয়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের দাবি পাশ কাটাতে সাম্প্রদায়িক হামলার মতো নানান কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে সরকার।’
ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘গণতন্ত্র পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। আওয়ামী সরকারের অধীনে ইলেকশন হতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আদমশুমারিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা কমে গেছে শতকরা এক ভাগেরও বেশি। বারবার এই সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখনই সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখল করেছে তারা।’
গণতন্ত্রের অভাবেই ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়কে দেশ থেকে তাড়িয়ে সম্পত্তি দখল করাই উদ্দেশ্য।’
নির্বাচনব্যবস্থা এমন জায়গায় নিয়ে গেছে, যেখানে শিশু পর্যন্ত রক্ষা পায় না। পুলিশের গুলিতে ঠাকুরগাঁওয়ে ইউপি নির্বাচনে শিশু হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি করেন মির্জা ফখরুল। রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি যে আন্দোলন করছেন, সেটাও আওয়ামী লীগের কৌশল বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মুখপাত্র।
বিএনপির তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ‘নড়াইলের দীঘলিয়া গ্রামে ৭০ শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায়। অথচ পুলিশের নাকের সামনে হিন্দুর সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হল।’ ২২টি পরিবার এবং ৯টি মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির তদন্ত কমিটির অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরীন মুন্নি, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি, অমলেন্দু দাস অপু ও নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।